ই-সিগারেট, ভেপ, পাশাপাশি সব ধরনের ইমার্জিং টোব্যাকো প্রোডাক্ট, কুম্ভি পাতা ও টেন্ডু পাতায় মোড়ানো বিড়ি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে ‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করা হয়েছে।
সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) রাতে রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে এই অধ্যাদেশটি অনুমোদন পায়, যা আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ থেকে সহ-সাক্ষরিত। এই নতুন নিদের্শনা ২০০৫ সালে গৃহীত ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইনের সংশোধনী হিসেবে জারি করা হয়েছে। এতে তামাক, তামাকজাত দ্রব্য, নিকোটিন ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট উপাদানের সংজ্ঞা স্পষ্টভাবে নতুনভাবে নির্ধারিত হয়েছে।
অধিনিয়মে উল্লেখ করা হয়েছে, ই-সিগারেট, ইলেকট্রনিক নিকোটিন ডেলিভারি সিস্টেম, হিটেড টোব্যাকো প্রোডাক্ট, নিকোটিন পাউচসহ অন্যান্য নিকোটিনজাত দ্রব্যের তালিকায় যোগ করা হয়েছে। পাশাপাশি কুম্ভি পাতা ও টেন্ডু পাতায় মোড়ানো বিড়ি সম্পূর্ণভাবে অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।
অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি ইলেকট্রনিক নিকোটিন ডেলিভারি সিস্টেম বা এর যন্ত্রাংশ তৈরি, আমদানি, বিক্রয়, প্রচার, বিপণন, বিতরণ বা ক্রয়-বিক্রয় করতে পারবেন না। একই সঙ্গে ভেপিং বা ভেপারও নিষিদ্ধ। এই অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ তিন মাসের জেল বা দুই লাখ টাকা জরিমানা কিংবা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। দ্বিতীয় বা আরো বেশি বার অপরাধ করলে দণ্ড দ্বিগুণ হবে।
কারো কোম্পানি যদি এই নিয়ম লঙ্ঘন করে, তবে তার মালামাল জব্দ করা হবে এবং মালিক, ব্যবস্থাপক বা অন্য দায়িত্বরত ব্যক্তির জন্য ছয় মাসের জেল বা পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা নির্ধারিত। এই ধরনের অপরাধে লাইসেন্স বাতিলেরও প্রস্তাব আছে।
কোনো ব্যক্তি ই-সিগারেট বা এর যন্ত্রাংশ ব্যবহার করলে তাকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে।
এছাড়া, কুম্ভি পাতা ও টেন্ডু পাতা বা অন্য গাছের পাতায় মোড়ানো বিড়ি উৎপাদন, আমদানি, সংরক্ষণ, বিক্রয়, পরিবহন বা ক্রয়-বিক্রয় করলে তিন মাসের কারাদণ্ড বা দুই লাখ টাকার জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার বিধান রাখা হয়েছে। কোম্পানি এই অপরাধে জড়িত থাকলে তাদের লাইসেন্স বাতিল, আর্থিক জরিমানা বা লেনদেন স্থগিত করা যেতে পারে।
সবশেষে, কুম্ভি বা টেন্ডু পাতা দিয়ে মোড়ানো বিড়ি ব্যবহার করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানার শাস্তি দেওয়া হবে। এই কঠোর নিয়মের মাধ্যমে বাংলাদেশের তামাক ও ই-সিগারেটের দৃষ্টিভঙ্গি বদলে দিতেই এই সম্প্রতি আইনি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
Leave a Reply